স্বদেশ ডেস্ক: সিলেটে মা ও বাবার দ্বন্দ্বের বলি হলো শিশু সাবিহা। পাষণ্ড মা বালিশ চাপা দিয়ে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে তাকে। এরপর থানায় এসে নিজেই আত্মসমর্পণ করেছে। বলেছে; নিজেই বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করেছে তার সন্তানকে। পুলিশ সন্তান হত্যার দায়ে মা নাজমিন বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে। এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে সিলেট শহরতলীর শাহপরানের নিপবন আবাসিক এলাকায়। এলাকার আজাদ মঞ্জিলের বাসিন্দা সাব্বির আহমদ একজন প্রবাসী। তার স্ত্রী নাজমিন বেগম।
সাবিহা নামের এক বছর ৫ মাস বয়সী একটি কন্যাসন্তান রয়েছে তাদের। প্রবাসী সাব্বির আহমদ পূর্বেও বিয়ে করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে- গতকাল বিকাল ৪টার দিকে কোতোয়ালি থানায় আসেন নাজমিন বেগম। তিনি নিজেকে তার সন্তানের হত্যাকারী হিসেবে পরিচয় দেন। বলেন- ‘আমি আমার মেয়ের খুনি, আমাকে গ্রেপ্তার করুন।’ এ সময় ওসি মোহাম্মদ আলী মাহমুদ তাকে বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদে নাজমিন বেগম বালিশ চাপা দিয়ে নিজের মেয়ে সাবিহাকে খুন করেছে বলে জানায়। এবং সাবিহা বর্তমানে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে বলেও তথ্য দেয়। এরপর ওসি খোঁজ নেন হাসপাতালে। সেখানে শিশু সাবিহার লাশ থাকার বিষয়ে সত্যতা পান। ওই শিশুর সঙ্গে হাসপাতালে এসেছিলেন কিশোর বয়সী সৎ ভাই বোন। তারা লাশের পাশে বসে কাঁদছিলো। ঘটনার সত্যতা পেয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশ শিশুটির মা নাজমিন বেগমকে গ্রেপ্তার করে। গতকাল বেলা ২টার দিকে নিপবন আজাদ মঞ্জিলে স্বামীর বাসায় এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানায় নাজনিন। পুলিশ জানায়- সিলেটের গোলাপগঞ্জের কালিকণ্ঠপুরের বাসিন্দা নাজমিন বেগমের সঙ্গে প্রবাসী সাব্বির আহমদের বিয়ে হয়েছে কয়েক বছর আগে। গত দেড় মাস আগে সাব্বির আহমদ প্রবাস থেকে দেশে ফিরেন। তার আগে থেকেই নাজমিনের সঙ্গে সাব্বিরের পারিবারিক বিরোধ দেখা দেয়। এ কারণে দেশে ফিরলেও নাজমিনের সঙ্গে ঘর সংসার করছিলেন না। কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ আলী মাহমুদ জানিয়েছেন- নাজমিন বেগম বিকালে থানায় এসে আত্মসমর্পণ করেন। তিনি নিজের সন্তানকে খুন করেছেন বলে জানান। তার দেয়া তথ্য মতে হাসপাতালে খবর নিয়ে সত্যতা জানতে পারি। পরে নাজমিন বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি জানান- স্বামীর সঙ্গে বিরোধের জের ধরে শিশুকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে নাজমিন। মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এদিকে- শিশু হত্যার খবর পেয়ে সন্ধ্যায় থানায় যান প্রবাসী সাব্বির আহমদ। তিনি এ ব্যাপারে বাদী হয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জয়নাল হোসেন জানিয়েছেন- ওই শিশুটিকে নিয়ে এসেছিলো তার দুই সৎ ভাই বোন। ওরাও কিশোর বয়সী। লাশের পাশে বসে কাঁদছিলো। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে হাসপাতালে রেখেছে। মামলা দায়েরের পর পরবর্তী কার্যক্রম চালানো হবে। তিনি বলেন- লাশ নিয়ে যারা এসেছিলো তারা বাড়ি চলে গেছে।